কিভাবে পেওনীয়ারের টাকা সরকারী রেমিটেন্স প্রণোদনা সহ বাংলাদেশী ব্যাংকে আনবেন
প্রথমেই বলে নেই, এই পোস্টে বর্ণিত কোন কাজের জন্য কোন প্রকার লিগাল লায়াবিলিটি আমি নিবো না, কোন ধরণের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির জন্যও আমি দায়ী থাকবো না। এখানে বর্ণিত যে কোন টিপস কাজে লাগাতে চাইলে অবশ্যই নিজ দায়িত্বে কাজ করবেন।
এবার আসি মূল পোস্টে। আমরা অনেকেই জানি যে ২০১৯ এর জুলাই থেকে বৈধপথে রেমিটেন্স আনার জন্য সরকার ২% হারে প্রবাসীদের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছে। খুবই ভালো উদ্যোগ। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রথম কয়েকমাসের টাকা পাই নি, তবে পরবর্তীগুলো ঠিকমতই পেয়েছি।
প্রবাসী ছাড়াও বাংলাদেশে যারা আউটসোর্সিং বা রিমোট জব করে থাকেন তারাও নিয়মিত বৈদেশিক মুদ্রা রেমিটেন্স হিসেবে আনেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গ্যাজেট অনিবাসী প্রবাসী ব্যতীত অন্য কেউ এই সুবিধার আওতায় আসবে না। ফলাফল স্বরুপ পেওনীয়ারের মত কোম্পানীর মাধ্যমে যেসব ট্রানজেকশন হচ্ছে, অনেকেই সেটার বিপরীতে সরাসরি কোন ইন্সেন্টিভ পাচ্ছেন না!
আজকে আমি একটা ঘুরো পথ দেখাবো যেটার মাধ্যমে আপনি প্রবাসী না হয়েও ইন্সেনটিভ সব টাকা দেশে আনতে পারবেন পেওনীয়ার থেকে।
এজন্য আপনার মূলত দরকার হবে আপনার নামে একটা বিদেশী ব্যাংক একাউন্ট, সবচাইতে ভালো হয় US একাউন্ট হলে। (কেন US হলে ভালো হয়, সেটা পরে বলতেছি)। আগে একটা ফরেক্স সাইট থেকে US ব্যাংক একাউন্ট খোলা যেতো। সেটা এখনো আছে কিনা আমি শিওর না। আরও অন্য পথ থাকতে পারে। বর্তমানে আমার এই কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি পছন্দ Transferwise Borderless Account, এটার মাধ্যমে ট্রান্সফারওয়াইজ থেকে আপনি একটা ভার্চুয়াল US ব্যাংক একাউন্ট পেতে পারেন।
ট্রান্সফারওয়াইজে একাউন্ট হয়ে গেলে ওরা আপনাকে একটা US একাউন্ট নাম্বার দিবে, ACH রাউটিং নাম্বার সহ। আপনি আস্তে করে এই ডিটেইলস টা নিয়ে আপনার পেওনীয়ার একাউন্টে এড করে দিন। পেওনীয়ার ২-৩ দিন টাইম নিবে, এপ্রুভ করার জন্য। এরপর ছোট একটা উইথড্র করে দেখুন সব ঠিক মত আছে কিনা। উইথড্র হতে ২-৩ দিন টাইম লাগতে পারে।
সব ঠিকটাক থাকলে এবার মেইন এমাউন্ট ট্রান্সফারওয়াইজে উইথড্র দিয়ে দিন। সেখানে ১-২ দিনে টাকা চলে আসবে। এবার সেখান থেকে আপনার দেশী একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ১-২ দিনে আপনার টাকা চলে আসার কথা। আরও একদিন টাইম লাগতে পারে কাঙ্খিত প্রণোদনার টাকা একাউন্টে জমা হতে!
সেম ভাবে আপনি ট্রান্সফারওয়াইজের অন্য কারেন্সীগুলাও ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন, EUR একাউন্ট ব্যবহার করে ইউরোপীয়ান ক্লায়েন্টের কাছ থেকে ডিরেক্ট পেমেন্ট নিতে পারবেন।
কিছু টিপসঃ
- চেষ্টা করবেন US একাউন্টের জন্য। কারণ পেওনীয়ার থেকে US একাউন্টে ট্রান্সফার ফ্রী। যেমন Rovolut আপটু ৬০০০ ইউরো ফ্রীতে উইথড্র করতে দেয়, কিন্তু US একাউন্ট নাই ওদের। এজন্য ডাবল কনভার্শনের পর কতখানি লাভজনক হবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়!
- চেষ্টা করবেন ওয়ার্কিং ডে তে ট্রান্সফারওয়াইজ থেকে উইথ্ড্র দিতে। (শুক্র থেকে রবিবার এড়িয়ে যাবেন)। এতে রেট ভালো পাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
- চেষ্টা করবেন ১৫০০ ডলারের নিচে উইথড্র দিতে দেশী ব্যাংকে। প্রয়োজনে মাল্টিপল উইথড্র দিতে পারেন। বেশি দিতে পারেন, বাট সেক্ষেত্রে ব্যাংক আপনার কাছে এক্সট্রা কাগজ পত্র চাইতে পারে। অবশ্য এক্ষেত্রে ৩ ডলার এক্সট্রা চার্জ যায় প্রতিবার, বাট আজাইরা হ্যাসল থেকে চার্জ ভালো আমার কছে!
- আপনি চাইলে সেম ভাবে আপওয়ার্ক সহ বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকেও ডিরেক্ট এই একাউন্টে পেমেন্ট নিতে পারবেন। যেমন আপওয়ার্ক থেকে ACH ট্রান্সফার ফ্রী। বাচলো আরও ২-৪ ডলার! অনেক মার্কেটপ্লেসই ACH ট্রাসন্সফার সাপোর্ট করে!
আসেন এবার একটু মলম বেচিঃ
যদি এখনো ট্রান্সফারওয়াইজের একাউন্ট না থাকে তাহলে https://transferwise.com/invite/i/mohammadb97 এই লিংক থেকে একাউন্ট খুলতে পারেন। আপনি আমি দুইজনেই কিছু বোনাস পাবো আরকি!
কমেন্টে আপনার এক্সপেরিয়েন্স জানাতে পারেন। আরও ভালো কোন ব্যবস্থা আপনার জানা থাকলে সেটাও জানাতে পারেন আমাদেরকে!
আপডেট
অনেকেই আমার সাথে যোগাযোগ করেছেন, রেসিডেন্স লোকেশন বাংলাদেশ দিলে ফুল ফিচার্ড একাউন্ট দিচ্ছে না ট্রান্সফারওয়াইজ। আমি খুবই দুঃখিত এই ব্যাপারে। আমি আসলে খেয়াল করতে পারি নাই জিনিসটা। যাইহোক, এখানে ট্রান্সফারওয়াইজটা মেইন জিনিস না। মেইন হলো, আপনার নিজের নামে অথবা অন্য কোন ব্যক্তির নামে একটা US একাউন্ট দরকার ACH রাউটিং সহ। সেটা আপনি ট্রান্সফারওয়াইজ ছাড়া ম্যানেজ করতে পারলেও কাজ হবে।